লুটন, ১০ ডিসেম্বর: বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দঘন পরিবেশে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আগত কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে “ইউনিটি অব মৌলভীবাজার”-এর নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান ও ডিনার পার্টি লুটন শহরে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রউফ তালুকদার। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সানি ও রাসেল খান। অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৭১-এর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক এম. এ. মান্নান। তিনি নবগঠিত কমিটির সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর সভাপতি আব্দুল আহাদ চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডার্স কনভেনর মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব মোহাম্মদ মকিস মনসুর, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অলি খাঁন এমবিই, অ্যাকাউন্ট্যান্ট রফিক হায়দার রিপন, সাবেক ছাত্রনেতা আহমেদ হাসান, সৈয়দ ফজলুল হক সেলিম ,কবি কাজল রশিদ, ইব্রাহিম তালুকদার।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আব্দুল মালিক, প্রাক্তন  সভাপতি সৈয়দ শামীম ইসলাম, সাবেক সেক্রেটারি কামরুজ্জামান খাঁন কমরু, প্রাক্তন সেক্রেটারি শফিকুর রহমান, ট্রেজারার মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান, সহ সভাপতি শামীম চৌধুরী, সহ সভাপতি শাহাজান সিরাজ, সহ সভাপতি শেখ জাহাদ জসিম,সহ সভাপতি ফয়সল ইসলাম,সহ সভাপতি তপু  তোফায়েল খাঁন, সহ সভাপতি নিয়ামত খাঁন, সহ সভাপতি সেলিম আহমেদ,সহ সভাপতি আতিক লাকি,সহ সভাপতি আজিজুর রহমান মুন, সহ সভাপতি মাহবুবুর রহমান শিবলু, সহ সাধারন সম্পাদক মাহফুজ আহমদ,সহ সাধারন সম্পাদক রাজু আহমেদ, জয়েন্ট ট্রেজারার সাইফুল হক খালেদ, জয়েন্ট ট্রেজারার  সাদিকুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাইনুল হোসেন বেলাল,সহ আন্তর্জাতি বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী,ক্রীড়া সম্পাদক রেজওয়ান হোসেন রাজু, সহ ক্রীড়া সম্পাদক শাওন তালুকদার, সাংস্কৃতিক  সম্পাদক মোহাম্মদ মোস্তাকিম আহমেদ টিটু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমিনুর চৌধুরী, নাজমুল ইসলাম, ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী, সাহেদ কূরেশী, সৈয়দ জামান, আনোয়ার আহমেদ, ইসফাক আহমেদ সজিব প্রমুখ।  সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সৈয়দ রুয়েজ আহমদ, ও পরিশেষে দোয়া পরিচালনা করেন মাহফুজ আহমেদ। দোয়ার মাধ্যমে সংগঠন এর প্রয়াত  উপদেষ্টা  মুক্তিযোদ্ধা ইতেখার উদ্দিন, এবং বাংলাদেশ টিমের সদস্য মরহুম মোহাম্মদ কামাল মনসুর এর রুহের  মাগফেরাত কামনা করা হয়েছে। 
অনুষ্ঠানে র‍্যাফেল ড্র–এর প্রথম পুরস্কার লাভ করেন লুটনের মো. ইকবাল হোসেন, দ্বিতীয় পুরস্কার পান লন্ডনের শামীম চৌধুরী এবং তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করেন মাইনুল হোসেন বেলাল। আমন্ত্রিত অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে আকর্ষণীয় পুরস্কার তুলে দেন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজার জেলার মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব ক্ষেত্রে জেলার মানুষের অবদান থাকা সত্ত্বেও উন্নয়নে বৈষম্য বিদ্যমান, যার অবসান জরুরি। বক্তারা মিরপুর–মৌলভীবাজার–ফেঞ্চুগঞ্জ হয়ে সিলেট সড়ককে চারলেনে উন্নীত করা, মৌলভীবাজারে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, শমসেরনগর বিমানবন্দর চালু করা এবং জেলার সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জোর দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে থাকা মৌলভীবাজার জেলার মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। জেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোর বেশিরভাগই বর্তমানে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। সড়ক সংস্কারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাসে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য দীর্ঘ যানজট এক বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল অবস্থার কারণে জরুরি প্রয়োজনে অন্তত ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ৫ ঘন্টার যাত্রাপথ কখনো কখনো ১৫–১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ফলে ট্রেন ভ্রমণের উপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। টিকেট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের কারণে ট্রেনের টিকিটও বর্তমানে সোনার হরিণের মতো মূল্যবান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে ইউনিটি অব মৌলভীবাজারের বিগত দিনের কার্যক্রম প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হলে উপস্থিত সবাই তা ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়া তারা আগামীতে জেলার উন্নয়ন ও মানবতার কল্যাণে অতীতের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আসন্ন রামাদান প্রজেক্টের খাদ্য সামগ্রী বিতরণে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন। ঐক্যের সুতায় বাঁধা এই সম্মেলন প্রবাসী মৌলভীবাজার জেলাবাসীদের  মধ্যে ঐক্য ও দায়িত্ববোধের নতুন অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ যেনো এক প্রাণের মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে।